মঙ্গলবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৫

রোবট বানাতে চাও?

·   0

স্কুল পড়ুয়া বেনজির। সব বন্ধুদের মত ডানপিঠে তার স্বভাব। কিন্তু বেনজিরের আছে আরেকটা ব্যপার- যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। সুযোগ পেলেই রেডিও, টিভি কিংবা খেলনা গাড়ি খুলে ওর ভেতরের কলকব্জা পরীক্ষা করা যেন ওর নিত্যদিনের কাজ। খেলনা গাড়ি ভেঙ্গে মটর, লাইট খুলে মাঝে সাঝে হরেক রকমের জিনিস বানিয়ে ফেলে ছেলেটা। তখন বেনজিরের আনন্দ আর ধরে না! আমাদের সেই ছোট্ট বেনজির আসলে একজন ক্ষুদে রোবট অনুসন্ধিৎসু- এমন একজন যিনি বিজ্ঞানীও নন আবার গল্পকথার‍ আয়রন ম্যান-ও নন। পৃথিবী জয় করবার মত বিশাল রোবট বানানোর পরিকল্পনা তার নেই। তবে দুটো চাকা লাগিয়ে দিলে চলতে পারে কিংবা শব্দ করলে সাড়া দিতে পারে- এরকম মজার রোবট বানিয়েই আনন্দ পায় সে। এমন রোবট বানিয়ে ফেলা যেটা কথামত ঠিকঠাক কাজ করবে, ঠিক ঘরের পোষা বেড়ালটার মত করে সব কথা শুনবে। শুধু পার্থক্য হল রোবটটার 'জীবণ' তৈরি করবে একজন রোবট অনুসন্ধিৎসু।



আমাদের বেনজিরের সাথে মিল আছে অনেকেরই। যারা এরমধ্যে নিজে নিজেই বানিয়ে ফেলেছ এমনকিছু- তারা ইতোমধ্যেই জেনে গেছ আসল মজা। সৃষ্টি করার আনন্দ। আরো জেনে গেছ ক্ষুদে রোবটটা তৈরী করতে গিয়ে কতই না বিপত্তির মুখে পড়তে হয়। বেশ কদিন খেঁটেখুঁটে বানানোর পর যখন ঠিকঠাক কাজ করে না- তখন আসলেই অনেক কষ্ট হয়, তাই না? কিন্তু লেগে থেকে শেষ দফায় যখন সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়- তখন সব কষ্ট আনন্দের মাঝে ডুবে যায়।   



যারা এরমধ্যে এরকম কাজ করনি তাদের জন্য সামনে অপেক্ষা করছে এমন এক কাজের ক্ষেত্র যেখানে রয়েছে ব্যাবহারিক অভিজ্ঞতা অর্জন আর অফুরন্ত আনন্দ। চাইলেই যেখানে নিজের বাধ্যগত রোবট তৈরি করে নেয়া যায়- যেটা ঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেবে কিংবা ভোর হলে নিজে থেকেই জানালা খুলে দেবে কিংবা সময়মত রান্না করে দেবে খাবার। কিংবা এমন রোবট- আলো কিংবা মেঝেতে আঁকা লাইন অনুসরন করে নিজে থেকেই পথ চলতে পারবে যেটা। এমন হাজারও মজার পরীক্ষা-নিরীক্ষা অপেক্ষা করছে সামনে।



ক্ষুদে রোবট বানাতে কি আসলে অনেক কিছু জানা লাগে? মোটেও না। রোবট শব্দটাই অনেক ভারী, তাই শুরুতেই ভারী চিন্তা মাথায় চলে আসে। ওসব চিন্তা মাথা থেকে একেবারে সরিয়ে নাও এখন। ক্ষুদে রোবট তৈরিতে জানা লাগবে ইলেকট্রনিক্স এর প্রাথমিক কিছু ধারনা- যার অনেকটাই স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে সাজানো। রোবটের কাঠামো তৈরি নিয়ে চাই প্রাথমিক কিছু ধারনা। কিছু রোবট আবার পটু। ওগুলো বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে কিংবা কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এরকম রোবট তৈরীতে জানতে হয় প্রোগ্রামিং। আর প্রোগ্রামিং শেখা যেমন মজার তেমনি সহজ! তুমি যদি কোন কিছুই শুরু থেকে না জেনে থাক তাহলে এই ব্লগ থেকে টিউটোরিয়াল পড়ে নিতে পার কিংবা না পেলে গুগল থেকে সার্চ করে নিতে পার। বেনজিরের ব্লগ এ শুরু থেকে আরম্ভ করা যায় এমন অনেক প্রজেক্ট আছে যেগুলো সময় নিয়ে পড়লেই অনেক কিছু জানা যাবে।



একজন ক্ষুদে রোবট অনুসন্ধিৎসু। বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া যার লক্ষ নয়, নতুন কিছু তৈরি করার মধ্যেই যার আনন্দ। শুধুই কি আনন্দ- আর কিছু শেখা হবে না? যে বন্ধুরা ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশলবিদ্যায় পড়ছ কিংবা যারা ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাও তাদের জন্য ব্যাবহারিক দক্ষতা খুবই দরকারি। রোবটিক্স নিয়ে এখন থেকেই কাজে নেমে পড়লে তৈরী হবে অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতা তৈরী করে আত্নবিশ্বাস। এই দুই- এর সম্মিলন যখন তোমার ভেতর তৈরী হবে, তখন তুমি নিজেই আবিস্কার করবে তোমার সম্ভাবনা। তুমি কি করতে পার- তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে। খ্যাতি কিংবা সুনাম-এর পিছনে তোমাকে ছুটতে হবে না, ও দুটো তখন তোমার পিছনে ছুটবে। এখন শুধু প্রয়োজন ধৈর্য আর শেখার আগ্রহ।



আর এমন আগ্রহী বন্ধুদের জন্য ব্লগার বেনজির খুলে দিচ্ছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। কারন এই ব্লগে রোবটিক্স নিয়ে থাকছে রোবট তৈরীর খুঁটিনাটি ব্যাপার নিয়ে অনেক তথ্য, হরেক রকমের রোবটিক্স প্রজেক্ট আরো অনেক কিছু।