ব্লগগুলি

বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০১৭

প্রকৃতির এক রহস্যের নাম “প্রোটনের জীবনকাল”

আমাদের এই প্রকৃতি কতটা বিশাল আর রহস্যময় তার হিসাব করা সত্যিই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবুও পৃথিবীর মহাপুরুষেরা প্রকৃতির এই রহস্য উম্মোচন করার জন্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দিনের পর দিন শ্রম আর সময়ের বিনিময়ে প্রকৃতির রহস্যগুলোর কোনো কোনটা মাঝে মাঝে আমাদের কাছে জট খোলে আবার কোনটা রহস্যই থেকে যায়। জট না খোলা এসকল রহস্য যে কত কত আছে আমাদের আশেপাশে তার হিসাব শুধু প্রকৃতিই জানে। মানুষের পক্ষে হয়ত প্রকৃতির সকল রহস্যের সমাধান কোনোদিনও সম্ভব হবেনা। আবার হয়তবা হতেও পারে। সময় আর প্রযুক্তির আরো উন্নতির ফলে হয়তবা কোনো একদিন আমরা প্রকৃতির মূল অংশে পৌঁছাতে পারব। কিন্তু সেটা কবে তার হিসাব আজও অজানা।
রহস্যের বেড়াজালে ঘূর্ণনরত অসংখ্য অমীমাংসিত রহস্যের একটি হলো ”প্রোটনের জীবনকাল”। প্রোটনের জীবনকাল নিয়ে বিজ্ঞান মহলে আজও অমীমাংসিত সমাধান প্রবাহিত হচ্ছে। যে প্রবাহটার শেষ কোথায় বা আদৌ শেষ হবে কিনা তা প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের চরম উন্নতির এ দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে কেউ সমাধান দিতে পারছেননা। প্রোটনের জীবনকাল ব্যাপারটা এখনো পদার্থ বিজ্ঞানের প্রধান রহস্যগুলোর একটি।
·   0

বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭

চে গুয়েভারার ভাইয়ের স্মৃতি

১৭ বছরের তরুণ চে গুয়েভারার কাঁধে ছোট ভাই হুয়ান মার্তিন। ১৯৪৫ সালের ছবি l 

বলিভিয়ার লা হিগুয়েরা নামের সীমান্তবর্তী এক গ্রামের যে স্কুলঘরে ১৯৬৭ সালে বিপ্লবী এরনেস্তো চে গুয়েভারাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, ৪৭ বছর পর প্রথম সেখানে পা রাখেন তাঁর ছোট ভাই হুয়ান মার্তিন গুয়েভারা।

জায়গাটা এখন ব্যস্ততম পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ চে। এই বিপ্লবীর চিরচেনা ছবি শোভা পাচ্ছে চারপাশে।

হুয়ান মার্তিন যখন বাসিন্দাদের কাছে নিজের পরিচয় দেন, অবিশ্বাসী কণ্ঠে তাঁরা বলে ওঠেন, ‘যিশুর কোনো ভাইবোন থাকতে পারে না!’

হুয়ান লিখেছেন, ‘এখানকার সবার কাছে চে একজন সাধু-সন্ন্যাসী হয়ে উঠেছেন। তাঁর ছবি সামনে নিয়ে প্রার্থনা করা হয়, অলৌকিক প্রত্যাশা করা হয় তাঁর কাছে। এ এক ভয়ংকর অবস্থা। আমার ভাইয়ের চিন্তা ও আদর্শ ধুয়েমুছে গেছে।’

হুয়ানের সঙ্গে চের বয়সের পার্থক্য ছিল ১৫ বছর। ছোট ভাইকে প্রায় সন্তানের মতোই দেখতেন চে। মৃত্যুর কিছুকাল আগে ঘনিষ্ঠজনদের কাছে চে বলেছিলেন, ছোট ভাইয়ের সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি নৈকট্য অনুভব করেন তিনি।

চের সঙ্গে নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণা করেছেন হুয়ান। গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর স্মৃতিচারণামূলক বইয়ের ইংরেজি সংস্করণ চে, মাই ব্রাদার। প্রকাশক পলিটি প্রেস। হিস্পানি ভাষায় মূল বইটি বেরিয়েছিল গত বছর।

বইটিতে হুয়ান লিখেছেন এরনেস্তোর বিপ্লবী হওয়ার পারিবারিক কাহিনি। উঠে এসেছে অ্যাজমায় ভোগা এক শিশুর কথা, যার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে শুষ্ক আবহাওয়ার অন্য শহরে ঠিকানা বদল করেছিল পুরো পরিবার। টগবগে তরুণ চে পড়ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যা। কিন্তু মোটরবাইকে করে দুই বছর লাতিন আমেরিকার পথে পথে ঘুরে বদলে যায় তাঁর জীবনদর্শন। গড়ে ওঠে সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে বিপ্লবী চেতনা ও রাজনৈতিক আদর্শ।

ভাইয়ের কাছে কেমন ছিলেন চে? হুয়ান বলেন, ‘বাবা ও মায়ের মিশেলে গড়ে উঠেছিল সে। মা সিলিয়া ডি লা সারনা ছিলেন ধীরস্থির, বুদ্ধিমতী ও একই সঙ্গে প্রথাবিরোধী। বাবা এরনেস্তো গুয়েভারা লিঞ্চ আবার নিজেকে বেঁধে রাখার মানুষ নন। পরিবার থেকে কিছুটা দূরেই থেকেছেন। দুজনের বৈশিষ্ট্যই এসেছিল চের মধ্যে। আমার কাছে বাবার বিকল্প ছিল সে। আবার ছিল ভাই ও বন্ধুও।’
কিন্তু ১৯৫৭ সালের পর বদলে যায় চের পরিচয়। একই সঙ্গে হুয়ানের পরিচয়ও বদলে যায়। আগে ছিলেন মেডিকেল পড়ুয়া চের ভাই। পরে হলেন কিংবদন্তি বিপ্লবী ও ভয়ডরহীন যোদ্ধা চের ‘ছায়ায় বেড়ে ওঠা’ হুয়ান মার্তিন গুয়েভারা। বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষ থেকে আশির দশকের শুরু পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে ছিলেন চের এই ছোট ভাই। পরে ছাড়া পান ঠিকই, কিন্তু তত দিনে প্রিয় ভাই আর পৃথিবীতে নেই।
হুয়ানের মতে, চের ভাস্কর্য বা মূর্তি গড়ে তাঁকে আরাধনা করার প্রয়োজন নেই। চেকে এই পূজার বেদি থেকে নামিয়ে আনতে হবে। সবার উচিত তাঁকে একজন ব্যতিক্রমী মানুষ হিসেবে দেখা, স্রেফ মানুষ, যিনি কিনা মার্ক্সবাদী আদর্শে বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে চেয়েছিলেন।
বিশ্বে কি চের মতো আরেকজন বিপ্লবীর প্রয়োজন আছে? তেমন মানুষ কি পাওয়া সম্ভব? হুয়ান দ্বিধাহীনভাবে 
লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, পাওয়া সম্ভব। সে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু আমাদের কি ঠিক তাঁর মতো মানুষই প্রয়োজন? একজন গেরিলা? না। টুপি মাথায় পাহাড়ে থাকা কোনো মানুষ? না। কিন্তু এমন একজন মানুষ লাগবে, যাঁর পরিবর্তনের ভাবনা আছে। আছে সুস্পষ্ট নীতি, যা অর্থবিত্ত বা ক্ষমতার কাছে কখনো বিক্রি হয় না। চে এমনটাই ছিল। আমাদের এমন মানুষ দরকার। চে যখন বেঁচে ছিল, তখনকার তুলনায় আজকের পৃথিবী খুব ভালো অবস্থায় নেই। বরং আরও খারাপ অবস্থায় আছে। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আমাদের অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
·   0

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

ফ্লো চার্ট (Flow Chart)

ফ্লো চার্ট (বাংলায় প্রবাহ চিত্র)-এর নাম আমরা সবাই কমে বেশি শুনে থাকি। এখন ফ্লো চার্ট জিনিসটা কী, এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই আসে। ফ্লো চার্ট হচ্ছে এক ধরণের ডায়াগ্রাম বা চিত্র যা কোনো অ্যালগোরিদম, কাজের ধারা বা প্রসেস-কে চিত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন জ্যামিতিক চিহ্ন বা symbol দ্বারা প্রকাশ করে এবং সেই জ্যামিতিক চিহ্ন বা symbol গুলো তীরচিহ্ন দ্বারা একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে।
ফ্লো চার্টের মাধ্যমে একটি প্রোগ্রামের খুঁটিনাটি অংশগুলো খুব সহজেই বুঝানো যায়। যেমনঃ বাড়ি তৈরি করার সময় একজন আর্কিটেক্ট বাড়ির ডিজাইন করে আমাদের খুব সহজেই দেখাতে পারেন যে বাড়িটির কোথায় কী কী জিনিস থাকবে। ফ্লো চার্টের মাধ্যেমেই এই একই কাজই করা হয়। অর্থাৎ, একটি ফ্লো চার্ট বানানোর উদ্দেশ্য হলো একটি প্রোগ্রাম কীভাবে সমাধান করা হয়েছে, সেটি বিভিন্ন ডায়াগ্রাম বা চিহ্নের সাহায্যে অন্যকে বুঝানো।
ফ্লো চার্টের দুইটি প্রকারভেদ আছেঃ
  • ডাটা ফ্লো চার্ট ।
  • প্রসেস ফ্লো চার্ট।
প্রোগ্রামাররা ডাটা ফ্লো চার্ট ব্যবহার করে থাকে। কোন জায়গা থেকে ডাটা আসছে, ডাটা কিভাবে পরিবর্ধন হচ্ছে এবং কোথায় জমা হচ্ছে এসব চিহ্নিত করার জন্য প্রোগ্রামাররা ডাটা ফ্লো চার্ট ব্যবহার করে।
প্রসেস ফ্লো চার্ট কোন প্রসেস বা কাজকে ডকুমেন্ট আকারে দেখানোর জন্য, একটি কাজের কার্যকারিতা বা efficiency বুঝানোর জন্য, কোন প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়।
ফ্লো চার্ট ছোটখাট প্রসেস বা প্রোগ্রামের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফ্লো চার্টে সাধারণত দুই ধরণের বাক্স ব্যবহার করা হয়ঃ
  • প্রসেসিং স্টেপঃ এই ধাপকে এ্যাকটিভিটি বা কার্যক্রম ধাপও বলা হয়ে থাকে। একে আয়তাকার বাক্স দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
  • ডিসিশন স্টেপ বা সিদ্ধান্ত ধাপঃ এই ধাপকে ডায়মন্ড বা হীরক আকৃতি দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
নিচের ছবিতে আমি একটি ফ্লো চার্টের বিভিন্ন আকৃতির পরিচয় দিয়েছিঃ

আমরা একটা ছোট্ট উদাহরণের মাধ্যমে ফ্লো চার্টের ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করি। ধরা যাক, তুমি একজন সৌখিন মানুষ। তোমার শখ গলফ খেলা। তুমি মনে করলে শুক্রবার গলফ খেলতে বের হবে, যদি আবহাওয়া ভাল থাকে। বাংলাদেশে আজকাল আবার হুটহাট বৃষ্টি চলে আসে। তাই বের হওয়ার আগে তুমি আবহাওয়ার সর্বশেষ খোঁজ খবর নিয়ে বের হবে। এর জন্য তোমাকে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো আবহাওয়ার চ্যানেলে গিয়ে বা মোবাইলের অ্যাপস থেকে weather forecast দেখতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যদি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তুমি কী করবে আর না থাকলেই বা কী করবে। বৃষ্টি থাকলে তুমি ঘর থেকে বের হবে না আর বৃষ্টি না থাকলে বের হবে। এখন এই পুরো বিষয়টা যদি আমরা ফ্লো চার্টের মাধ্যমে দেখি তাহলে চিত্রটা হবে এমনঃ

এই ফ্লো চার্টটিতে প্রথমেই আমরা ফ্লো চার্টের নিয়মানুযায়ী start দিয়ে শুরু করেছি , ওভাল বাক্স দিয়ে সেটিকে চিহ্নিত করেছি। তারপর আমরা ওয়েদার চ্যানেল দেখার কাজটি করেছি। এখানে আমরা প্রসেসিং এর জন্য আয়তাকার চিহ্ন ব্যবহার করেছি, কারণ এখান থেকেই আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত বা ডিসিশন নেয়ার ধাপের দিকে যাবো। পরের ধাপে আছে ডিসিশন বা সিদ্ধান্ত ধাপ। সেখানে লেখা আছে “Rain Predicted?”, এখানে লক্ষ্য করে দেখো, ডিসিশন বা সিদ্ধান্ত ধাপে আমাদের অ্যারো বা তীর চিহ্ন আছে দুইটি; যা yes/no দিয়ে চিহ্নিত করা। যদি yes হয় তাহলে আমরা বলছি “Stay Home” এবং সেখান থেকে আরেকটি অ্যারো দিয়ে ফ্লো চার্টটি Stop করে দিচ্ছি। আবার যদি “Rain Predicted”-এ ডিসিশন হয় no, তাহলে আমরা “Play Golf” এর কাজ প্রসেসিং করে Stop ধাপে চলে যাচ্ছি। এখানে মনে রাখার বিষয় যে, ফ্লো চার্চের ডিসিশন সবসময় হয় ডান-বাম অথবা নিচের দিকে যাবে। কখনো উপরের দিকে যাবে না। কারণ, কোন কিছুর Flow সবসময় উপর থেকে নিচের দিকে আসে।
একটি সহজ প্রোগ্রামিং সমস্যার মাধ্যমে আমরা একটি ফ্লো চার্ট তৈরি করার চেষ্টা করি । ধরা যাক, আমরা দুইটি সংখ্যা যোগ করার জন্য একটি প্রোগ্রাম লিখবো। প্রোগ্রামটি হবে এমনঃ
#include
int main()
{
    int a,b,total;
    scanf("%d %d", &a, &b);
    total = a + b;
    printf("%d\n",total);
    return 0;
}
প্রোগ্রামটির জন্য আমরা যদি ফ্লো চার্ট লিখি তাহলে হবে এমনঃ

অন্যান্য ফ্লো চার্টের মতই এটা start দিয়ে শুরু হয়েছে। যেহেতু দুইটি নাম্বার ইনপুট নেয়ার দরকার আছে আমাদের, তাই আমরা এখানে Input A, Input B নিয়েছি এবং সেটিকে সামান্তরিক চিহ্নের মাধ্যমে দেখিয়েছি। তবে, আলাদা আলাদা ভাবে এভাবে ইনপুট না নিয়েও পাশাপাশি Input A,B অথবা Read A,B এভাবেও ফ্লো চার্টে ইনপুট নেয়ার কাজটি দেখানো যায়। তারপর আমরা a,b দুইটি যোগ করে একটি Total ভ্যারিয়েবলে রেখেছি এবং এর পরের ধাপে Total প্রিন্ট করেছি। সবশেষে আমরা stop দিয়ে ফ্লো চার্টটি শেষ করেছি।
এবার যদি আমরা লুপ সংক্রান্ত একটি কোডের কথা চিন্তা করি, যেখানে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত বিজোড় সংখ্যা বের করার প্রোগ্রাম লিখতে হবে। প্রোগ্রামটি হবে এমনঃ
#include
int main()
{
    int i=0;
    while(i<=100)
    {
        if(i%2 != 0)
        {
            printf("%d\n",i);
        }
        i++;
    }
    return 0;
}
এই প্রোগ্রামটিতে আমরা while লুপের সাহায্যে 100 পর্যন্ত লুপটি চালিয়েছি এবং লুপের ভিতরে বিজোড় সংখ্যা বের করার কন্ডিশন দিয়েছি। বিজোড় সংখ্যা বা odd numbers বের করার জন্য if কন্ডিশনটিতে i এর যেসকল মানকে 2 দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ শূন্য হবে না সেই সংখ্যাগুলোকে আমরা প্রিন্ট করেছি। এই প্রোগ্রামটির ফ্লো চার্টে আমাদের ডিসিশন স্টেপ আসবে দুইটিঃ একটি while এর জন্য এবং একটি if এর জন্য। ফ্লো চার্টটি নিম্নরূপঃ



এখানে প্রথমেই আমরা i এর মান 0 এ্যাসাইন করে দিয়েছি, যেহেতু পরবর্তীতে আমরা i এর মান এক করে ইনক্রিমেন্ট করবো। তারপর আমরা while (i<=100) reached ডিসিশন ধাপে গিয়েছি। খেয়াল করে দেখো, এই ডিসিশন থেকে yes/no দিয়ে দুইটি তীর চিহ্ন বের হয়েছে। আমাদের প্রোগ্রামের লজিক আমাদের বলছে যতক্ষণ না i এর মান ১০০ এর সমান বা এর থেকে ছোট থাকছে , ততক্ষণ আমাদের if(i%2 !=0) কন্ডিশন তার কাজ করে যাচ্ছে এবং odd নাম্বার বা বিজোড় সংখ্যাগুলো প্রিন্ট করে যাচ্ছে। একই সাথে লুপটি সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, i এর মান compute i= i+1 এ যেয়ে এক এক করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন i এর মান 100 এর বড় হয়ে যাবে, তখন ফ্লো চার্ট stop হয়ে যাবে।
প্রশ্ন আসতে পারে, ফ্লো চার্ট ব্যবহার করার সুবিধা কী? প্রবলেম সল্ভিং এর সময় ফ্লো চার্ট ব্যবহার করে আমরা একটি প্রবলেমকে ছোট ছোট অনেকগুলো সুস্পষ্ট ভাগে ভাগ করতে পারি। অনেক সময় দেখা যায়, প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করার সময় আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছু বাদ দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যদি ফ্লো চার্টের মাধ্যমে আমরা আগে প্রবলেমটি analysis করি তাহলে আমাদের খুঁটিনাটি জিনিস বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা কমে। সেইসাথে অতিরিক্ত জিনিস, যা আমাদের প্রোগ্রামের requirements এ নেই, সেগুলো বাদ দেয়ার মাধ্যমে একটি প্রোগ্রামকে আরো বেশি efficient করা যায়।
·   0

রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬

রাস্পবেরি পাই

পাঠ্যবিষয়কে সহজবোধ্য এবং বাস্তবরূপে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য স্মার্ট ক্লাসরুমের ধারণা আজকাল খুব জনপ্রিয়। একটি স্মার্ট ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে কাগুজে পাঠ্যবিষয়কে ডিজিটাল রূপে উপস্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে স্মার্ট ক্লাসরুম বহুল প্রচলিত হলেও স্কুল পর্যায়ে এটি আমাদের দেশে খুব একটা প্রচলিত না। একটি বিদ্যালয়ের জন্য আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাহলে কি আমাদের দেশের বিদ্যালয়গুলোতে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি করা সম্ভব না? এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক Raspberry  Pi  Foundation  এর তৈরি মিনি কম্পিউটার Raspberry  Pi  এর কথা।
·   0

শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

প্রোগ্রামিং কনটেস্ট

কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রোগ্রামিং, যা সফটওয়্যার নির্মাণ কৌশলেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই বিষয়টি অন্যান্য লেখাপড়ার মতো নয় যে বই পড়লাম, কিছু প্রশ্নের উত্তর শিখে ফেললাম, পরীক্ষা দিয়ে সব ভুলে গেলাম। প্রোগ্রামিং হচ্ছে একটি দক্ষতা (skill)ব্যাপারটিকে সংগীতের সাথে তুলনা করা যায়। প্রোগ্রামিং চর্চার মাধ্যমেই ভালো প্রোগ্রামার হওয়া যায়, প্রোগ্রামিংয়ে উৎকর্ষ সাধন করা যায়।
·   0

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

এক মিনিট! আগে কী দেখেছি? দেজাভুঃ বিভ্রম নাকি সত্যি?

আমার মনে হয় আমার বয়সী অনেকেই এটা অনুভব করেছেন যে, কখনো কখনো একটি ঘটনা ঘটার পর মনে হয় “আরে এটা তো মনে হয় আগে দেখেছি!” যারা কখনো এটা অনুভব করেননি, তারা হয়তো এই কথাটাকে হাস্যকর ভাবতে পারেন, তবে আমার কাছে ব্যাপারটা হাস্যকর মনে হয় না। এইরকম ঘটনাকে বলা হয় দেজাভু (Deja -vu)। শব্দটা বহুল প্রচলিত একটা ফরাসি শব্দ। Deja vu-কে ইংরেজীতে ব্যাখ্যা করে বলা যায়, “The odd feeling you get when you sense you’ve already experienced something that you know you are doing for the first time” (একটি অদ্ভুত অনুভূতি যেখানে মনে হয় ঘটনাটা আগেও আপনার জীবনে ঘটেছিলো, অথচ আপনি জানেন যে, এটা আপনি প্রথমবারের মত করছেন)।
·   0

বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আজি হতে শতবর্ষ পরে প্রমাণ করিছ মোর তত্ত্ব খানি: স্থান-কালের হিল্লোলে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সনাক্তকরণ

আপেক্ষিকতা তত্ত্বের জনক কে? এই প্রশ্নের উত্তরের আমরা চোখ মুখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি আলবার্ট আইনস্টাইন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আপেক্ষিকতার সূচনা হয়েছিলো গ্যালিলিও গ্যালিলির হাত ধরে। গ্যালিলিও বলেছিলেন একটি সুষম গতিতে চলমান জাহাজের কেবিনে বসে আমরা স্থির আছি নাকি চলছি তা বোঝার কোনো সাধ্য নেই। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন কেবিনে আবদ্ধ অবস্থায় আমরা যদি কোনো বস্তুকে মেঝেতে ছেড়ে দিই তাহলে সেটি পেছনে পড়ে গেলে বেঝা যাবে জাহাজ চলমান। কিন্তু এটিও ঠিক নয়, সুষম গতিতে চলমান অবস্থায় কেবিনে অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি যদি উপর থেকে একটি বস্তুকে মেঝেতে ছেড়ে দেয় তবু এই স্থির অবস্থায় যেখানে পড়ার কথা সেখানেই পড়বে, কেননা এই বস্তুটিও জাহাজের সাথে সাথে চলমান। গ্যালিলীয় তার আপেক্ষিকতাকে এভাবেই সংজ্ঞায়িত করেছেন: কোনো ব্যক্তি যদি তার পরিপার্শ্বের সাথে একই বেগে সুষমভাবে গতিশীল থাকেন তাহলে ব্যক্তির পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় তিনি স্থির নাকি গতিশীল আছেন। এই কারণেই পৃথিবী সূর্যের চারপাশে সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার বেগে অতিক্রম করা সত্ত্বেও আমরা বুঝতে পারি না যে আমরা গতিশীল আছি। কিন্তু এ-তো আবদ্ধ কেবিনের জন্য। কেমন হয় আমরা যদি জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই? আমরা যদি দেখি যে বাইরের দৃশ্যপট সরে সরে যাচ্ছে তাহলেই তো বুঝতে পারব আমরা গতিশীল আছি। কিন্তু না, এই ক্ষেত্রে প্রশ্ন আসবে আমরা গতিশীল, নাকি বাইরের দৃশ্যপট? নাকি উভয়েই আংশিকভাবে গতিশীল? আমাদের পক্ষে বোঝার উপায় নেই। আমরা কেবল বলতে পারব আমাদের উভয়ের মধ্যে গতির পার্থক্য কত বা কতটা ‘আপেক্ষিক গতিতে’ আমরা পরস্পরকে অতিক্রম করছি। আইনস্টাইন গ্যালিলিওর আপেক্ষিকতা নিয়েই চিন্তার সূচনা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে তাঁর আপেক্ষিকতা তত্ত্বগুলো ‘ভেবে ভেবে’ আবিষ্কার করেছিলেন।
নিউটনের আপেল পতনের বিষয়টিকে সত্য ধরে নিয়েই চিন্তা করা যাক। নিউটন বলেছিলেন আপেল মাটিতে পতিত হয় কারণ এর উপর পৃথিবীর অভিকর্ষ (মাধ্যাকর্ষণ বল) প্রযুক্ত হয়। একটি বস্তুর উপর যদি কোনো বল প্রযুক্ত হয় তাহলে সেই বল বস্তুর ত্বরণের (বেগের পরিবর্তন) সৃষ্টি করে। কোনো বস্তু যদি সুষম বেগে চলতে থাকে তাহলে তার ত্বরণ থাকে না কিন্তু যদি তার বেগের পরিবর্তন ঘটে তাহলে আমরা বলতে পারি সেটি ত্বরিত হচ্ছে। যে কোনো বস্তুর উপর একটি নির্দিষ্ট স্থানে অভিকর্ষ বলের কারণে সুনির্দিষ্ট ত্বরণ ঘটে। পৃথিবী পৃষ্ঠে এই ত্বরণকে g দিয়ে সূচিত করা হয়। স্থুলভাবে এই মান ৯.৮ মিটার^২/সেকেন্ড। অর্থাৎ পৃথিবীতে পতনোন্মুখ কোনো বস্তুর বেগ প্রতি সেকেন্ডে ৯.৮ মিটার করে বৃদ্ধি পেতে থাকবে ভূপৃষ্ঠে পতিত হওয়ার আগ পর্যন্ত।
কিন্তু আইনস্টাইন বললেন, না এই ধরণের কোনো অভিকর্ষ বলের অস্তিত্ব নেই। মানে, অস্তিত্ব থাকতে পারে কিন্তু আমরা এই্ ধরণের কোনো বলের অস্থিত্ব ছাড়াই, বিকল্প পদ্ধতিতে আপেলের পতনকে ব্যাখ্যা করতে পারি। আমরা বলতে পারি আপেলটি স্থির আছে আর পৃথিবী নিজেই তার যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে আপেলের দিকে ত্বরিত হচ্ছে। আমাদের পক্ষে কেবল আপেল আর পৃথিবী পর্যবেক্ষণ করে বলা শক্ত কে কার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আইনস্টাইনের ভাবনা এই পরিস্থিতিতে কিঞ্চিৎ হাস্যকর শোনাতে পারে কিন্তু তার বিবৃতিতে যথাযথ যুক্তি ছিলো এবং এইভাবে ভাবতে ভাবতেই তিনি পরবর্তীতে সাধারণ আপেক্ষিকতা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সেটি কিভাবে, তা দেখা যাক।
মনে করি ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে একটি ট্রেন ত্বরিত হচ্ছে, অর্থাৎ সময়ের সাথে এর গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মনে করি ট্রেনের ভিতরে একজন মানুষ বসে আছেন। ট্রেনটি যদি ত্বরিত না হয়ে সুষম বেগে গতিশীল থাকত তাহলে সেই ব্যক্তি অনুভব করতেন না তিনি স্থির আছেন না গতিশীল, কিন্তু যেহেতু এটি ত্বরিত হচ্ছে সেই ব্যক্তি ট্রেনের পেছন দিকে একধরনের টান অনুভব করবেন। শুধু তিনিই নন তাঁর সাথে ট্রেনের ভেতরে যা কিছু অবস্থান করবে সবাই এই টান অনুভব করবে। এখন এই টানের সাথে অভিকর্ষের টানের পার্থক্য কোথায়? তেমন কোনো পার্থক্যই নেই বলা যায়, পার্থক্য শুধু দুটি বল দুই ভিন্ন দিকে অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু উভয় ধরের টানের প্রভাব বা ফলাফল একই ধরনের অনুভূত হবে। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, ট্রেনটি সামনের দিকে ত্বরিত হচ্ছে এটি বলা যেই কথা, এটি আমাদেরকে পেছন দিকে টানছে এই বলাও একই কথা। এই কথাটিই আইনস্টাইন পৃথিবীর ক্ষেত্রেও বলতে চেয়েছেন। এখন পৃথিবী পৃষ্ঠে একটি ত্বরিত ট্রেনের ক্ষেত্রে আমরা দুই ধরনের টান অনুভব করব। একটি টান ট্রেনের জন্য ট্রেনের পেছন দিকে, আরেকটি টান পৃথিবীর জন্য নীচের দিকে। এই দুই টানের সম্মিলিত প্রভাবে ট্রেনের ভেতরে আমরা কোণাকুনি বরাবর একটি সার্বিক টান অনুভব করব (নিচের চিত্র দ্রষ্টব্য)। এই টানটি ট্রেনে অবস্থিত প্রত্যেকটি বস্তুই অনুভব করবে। ফলে আমরা ট্রেনের ত্বরণ, পৃথিবীর অভিকর্ষ ইত্যাদি আলাদা আলাদা উল্লেখ না করে যদি বলি আমরা স্থির অবস্থায় আছি এবং একটি গ্রহ কোণাকুনি ভাবে আমাদের টানছে বা আমরা কোনো একটি গ্রহের পাহাড়ের ঢাল বরাবর স্থির অবস্থায় আছি তাহলেও পুরো বিষয়টি একই থাকবে। আমরা ট্রেন ভিতর থেকে আসলে বুঝতেই পারব না আসলে কী ঘটছে কিন্তু আমরা এভাবে ধরে নিলেও বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে কোনো অসুবিধা হয় না। আমরা উল্লম্ব (vertical) বলতে যা বুঝি, নতুন অবস্থায় সেই কোণাকুনি দিকটিকে উলম্ব হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যাবে বা উলম্ব দিকের মতোই আচরণ করবে।

আনুভুমিক ও উলম্ব দুই বলের প্রভাবে সৃষ্ট লব্ধি বল হবে কোণাকুণি বরাবর
 কাজেই আপেক্ষিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে বা ফলাফলের দিক থেকে আইনস্টাইন সঠিক বলেই মনে হয়। যদিও নিউটনীয় পদার্থবিদ্যার আলোক এটি শুধুই একটি গণনার অজুহাত এবং ভ্রান্তি। সত্যি ঘটনা হচ্ছে ট্রেনটি ত্বরিত হচ্ছে এবং পৃথিবী নিচের দিকে টানছে। কিন্তু আইনস্টাইন বললেন, দাঁড়াও, পৃথিবীর অভিকর্ষও যে একটা ভ্রান্তি নয় এবং পৃথিবী যে বস্তুটির দিকে ত্বরিত হচ্ছে না এটি আমরা নিশ্চিত হচ্ছি কিভাবে? নিউটনীয় পদার্থবিদ্যার আলোকে একটি বস্তু ত্বরিত হচ্ছে কিনা তা নির্ণয় করার উপায় হচ্ছে একটি জড় প্রসঙ্গ কাঠামো (inertial reference frame, যা ত্বরিত হচ্ছে না) ঠিক করা এবং তার সপেক্ষে কোনো কিছুর ত্বরণ নির্ণয় করা। কিন্তু এধরনের প্রসঙ্গ কাঠামো আমরা পৃথিবীতে কিভাবে পেতে পারি? আইনস্টাইন বললেন, ধরা যাক আমরা একটি প্রসঙ্গ কাঠামো চিন্তা করলাম যা মুক্তভাবে পৃথিবী পৃষ্ঠে পতিত হচ্ছে (g ত্বরণে)। এই প্রসঙ্গ কাঠামোর মধ্যে একটি বাক্স কল্পনা করা হলো যা একইভাবে মুক্তভাবে পড়ছে। বাক্সের ভিতরে যদি একজন ব্যক্তি অবস্থান করে এবং পুরো সিস্টেমটিকে মুক্তভাবে পড়তে দেওয়া হয় তাহলে ওই ব্যক্তির সাপেক্ষে বাক্সটি এবং বাক্সের ভিতরে অন্যান্য বস্তু রাখা হলে সবাই পরস্পরের সাপেক্ষে স্থিতি অবস্থায় থাকবে। এই অবস্থায় বাক্সের মুক্তভাবে পতনে যদিও ত্বরণ ঘটছে কিন্তু এই পরিস্থিতিকে মহাশূন্যে সকল বলের প্রভাবমুক্ত অবস্থায় একটি সুষমগতির প্রসঙ্গকাঠামো ব্যবস্থার সাথেই চিন্তা করা যায়। অর্থাৎ অভিকর্ষ বলহীন কোনো স্থানে একটি প্রসঙ্গ কাঠামো ব্যবস্থায় (স্থির বা সুষম গতির) যেমন অনুভূতি হবে পৃথিবীর নিকটে মুক্তভাবে পড়ন্ত ত্বরিত প্রসঙ্গকাঠামো ব্যবস্থাতেও একই অনুভূতি হবে এবং একটিকে আরেকটি হতে আলাদা করা যাবে না। বিষয়টিকে ঘুরিয়ে এভাবেও বলা যায়, বাক্সটি যদি মহাশূন্যের আকর্ষনবিহীণ স্থানের মধ্য দিয়ে g ত্বরণে উপরের দিকে উঠতে থাকে তাহলে ভিতরের বস্তুগুলো যেমন অনুভব করবে, পৃথিবীপৃষ্ঠে স্থির অবস্থায় রাখলেও একই রকম অনুভব করবে। আইনস্টাইন এই উদাহরণের মাধ্যমে উপসংহার টানলেন “কাজেই আমরা পৃথিবীর অভিকর্ষ বলকে একটি বিভ্রম হিসেবে সহজেই ধরে নিতে পারি।“ এই দুটি প্রসঙ্গকাঠামো ব্যবস্থার সমতুল্যতার একটি নাম ও তিনি দিলেন, The equivalence Principal।


বাক্সটি যদি মহাশূন্যের আকর্ষনবিহীণ স্থানের মধ্য দিয়ে g ত্বরণে উপরের দিকে উঠতে থাকে তাহলে ভিতরের বস্তুগুলো যেমন অনুভব করবে, পৃথিবীপৃষ্ঠে স্থির অবস্থায় রাখলেও একই রকম অনুভব করবে।
আইনস্টাইনের কথা হলো, যেহেতু অভিকর্ষ বলকে আমরা একটি বল হিসেবে না ধরে পৃথিবী নামক একটি বস্তু g ত্বরণে উপরের দিকে ছুটে চলার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে পারছি তবে শুধু শুধু কেন এখানে অভিকর্ষজ বল নামের একটি বল ধরে নেওয়া? কিন্তু এই ক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। পৃথিবী যেহেতু গোল কাজেই পৃথিবীতে ভিন্ন স্থানে মুক্তভাবে পড়ন্ত দুটি বস্তুর গতিপথ সমান্তরাল হবে না, বরং এদের গতিপথ পৃথিবীর কেন্দ্র বরাবর একীভূত হতে থাকবে। আইনস্টাইনের g ত্বরণে পৃথিবীকে উপরের দিকে গতিশীল রাখতে হলে এই দুটি বস্তুর দূরত্বতো পরস্পরের সাপেক্ষে একই থাকার কথা। কিন্তু এরা যেহেতু পৃথিবীর কেন্দ্রের অভিমূখে গমন করছে তার মানে বাক্সের ভিতরকার বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে পড়ন্ত অবস্থায় দূরত্ব হ্রাস পাচ্ছে, অথচ আইনস্টাইনের কথা অনুযায়ী এখানে কোনো বল কাজ করার কথা নয়, তাই বস্তুগুলোর কাছাকাছি আসাও কথা নয়। নিচের চিত্র দ্রষ্টব্য।


পৃথিবীতে পড়ন্ত বস্তুগুলো পড়তে পড়তে পরস্পরের কাছাকাছি আসতে থাকবে।
আরেকটি সমস্যা হলো উপগ্রহের কক্ষপথ। উপগ্রহের কক্ষপথ পড়ন্ত বস্তুর এই ধারনার মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেওয়া যাচ্ছে না। আইনস্টাইন এ দুটি বিষয় ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তখন এক অদ্ভূত ধারনার অবতারণা করলেন। তিনি স্থান-কালকে বাঁকিয়ে দিলেন! তিনি বললেন সমতল স্থান-কালের ক্ষেত্রে দুটি বস্তু সমান দূরত্বে থেকেই পতিত হওয়ার কথা কিংবা উপগ্রহের মতো কক্ষপথ পাওয়ার কথা নয়, কিন্তু যদি স্থান-কাল (spacetime) নিজেরাই বেঁকে কাছে চলে আসতে চায় তাহলে সেই বাঁকা স্থান-কালে দুটি বস্তুর কাছাকাছি চলে আসতে বা একটি উপগ্রহের কক্ষপথে আবর্তনরত থাকাতে কোনো সমস্যা নেই। এই স্থান-কালের বক্রতার আইডিয়াটি আইনস্টাইনের মাথায় আসতে সাত বছর লেগেছে। কিন্তু যখন তাঁর মাথায় এলো তখন দেখা গেলো মহাকর্ষীয় বলের অবতারণা না করেই, তথা স্থান-কালকে একটি ভারী বস্তুর চারপাশে বক্র চিন্তা করে নিয়েই মহাবিশ্বের গতিশীল বস্তুগুলোর গতি ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে এবং এভাবেই আপেক্ষিকতার সাধারণত তত্ত্ব (general theory of relativity) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই তত্ত্ব আইনস্টাইন আজ হতে ঠিক ১০০ বছর পূর্বে প্রকাশ করেন। এই ধরনের একটি বক্র স্থান-কালের গ্রাফ দেখানো যায় নিচের চিত্রের মতো।

স্থান কালের বক্রতার গ্রাফ। ভারী বস্তুগুলো না থাকলে এই গ্রাফ সমতল হতো।
মহাকর্ষ বলের মতোই স্থান-কালের বক্রতার পরিমাণ নির্ভর করবে ভরের উপর। কোনো বস্তুর ভর যত বেশী হবে তার চারপাশের স্থানকালের বক্রতাও তত বেশী হবে। এভাবে স্থান কালের বক্রতা থেকে একটি ভারী বস্তুর চারপাশে অপেক্ষাকৃত হালকা বস্তুর প্রদক্ষিণও ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। একজন পরিদর্শকের কাছে বস্তুটির গতি বৃত্তাকার মনে হতে পারে কিন্তু ওই স্থান-কালের ভিতরে সেই গতিটি সরলরৈখিক। স্থান-কাল নিজেই বৃত্তাকারে বেঁকে গেছে বলে বাহ্যিকভাবে গতিপথটিকে বৃত্তাকার বা বক্র মনে হয়।
নিচের ভিডিওর মাধ্যমে কিভাবে একটি বক্র স্থানকালের মধ্যে একটি বস্তু গতিপ্রাপ্ত হয় তা খুব স্থুল একটি তুলনার মাধ্যমে কিছুটা বোঝা যেতে পারে।

তবে এখানে স্থানকালের গ্রাফের বিষয়ে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। আমরা ছবিতে দেখানোর সময় স্থান-কালের যেই বক্রতা দেখাই সেটি ঠিক এভাবে বর্তমান থাকে না বা দৃষ্টিগোচর হয় না। এটি শুধুমাত্র একটি গ্রাফ। এর একটি অক্ষ বরাবর স্থান, এবং অপর অক্ষ বরাবর কাল বা সময় চিন্তা করে এই গ্রাফটি তৈরি করা হয়েছে। এই গ্রাফটি নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দিতে গেলে এই লেখাটি শেষ করা কঠিন হয়ে যাবে তাই আপাততঃ বেশি কিছু বলছি না। সাধারণ পাঠক আপাততঃ স্থানকালের গ্রাফটিকে একটি কাপড়ের সাথে তুলনা করতে পারেন উপরের ভিডিওটির মতো যাতে কোনো ভারী বস্তু রাখা হলে তা খানিকটা ডেবে যায় এবং তাতে কাপড়ে বক্রতা তৈরি হয়। কাপড়ের মাঝখানে যত ভারী বস্তু রাখা হবে সেটি তত বেশী ডেবে যাবে। এবং কোনো গতিশীল বস্তু এই ডেবে যাওয়া অংশের প্রভাবে একটা বাঁকা পথে পরিভ্রমন করবে।
এখন প্রশ্ন হলো, কেন নিউটনের মহাকর্ষীয় বলের তত্ত্ব ত্যাগ করে আমাদের এই অপেক্ষা জটিল ‘ধরে নেওয়া’ এবং ভেবে ভেবে বের করা তত্ত্ব গ্রহণ করতে হবে। এর কারণ আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব মহাকর্ষ ছাড়াও আরো অনেক কিছু ব্যাখ্যা করে যা নিউটনীয় তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে পারে না। এর মধ্যে রয়েছে কোন ভরযুক্ত বস্তুর পাশ দিয়ে আলোক রশ্মির বেঁকে যাওয়া তথা গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং (gravitational lensing), ভরযুক্ত বস্তুর কাছে সময়ের ধীর হয়ে যাওয়া বা কাল দীর্ঘায়ন (time dilation), র্ঘূণায়মান ভরের দিকে স্থান-কালের টান ইত্যাদি। আইনস্টাইন এই ঘটনাগুলো ভেবে ভেবেই বের করেছেন যদিও কিন্তু পরবর্তীতে বাস্তবিক ক্ষেত্রে এর সবগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে প্রমাণীত হয়েছে। কাজেই কোনো ভাবেই আইনস্টাইনের আপাত বিদঘুটে তত্ত্বটিকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। এই তত্ত্বটিতে তাঁর অনুমিত প্রায় সবকিছুই যথাযথ হিসেবে পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাঁর অনুমিত একটি বিষয়ই দীর্ঘদিন ঝুলে ছিলো। সেটিই হচ্ছে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ বা গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ (gravitational wave বা G wave)।
মহাকর্ষীয় তরঙ্গের ধারনা কিভাবে তৈরি হয়? আমরা স্থান-কালকে একটি কাপড়ের সাথে তুলনা করে নিয়েছি এবং দেখেছি যে একটি কাপড়ের উপর একটি ভারী বস্তুকে রাখা হলে তার আচরণ অনেকটা বাস্তব ক্ষেত্রে কোনো ভরযুক্ত বস্তুর আশাপাশে স্থান-কালের গ্রাফের আচরণের মতোই। আর কাপড়টি যেহেতু নমনীয় তাই এটিকে ভরের মাধ্যমে আন্দোলিত করা সম্ভব। যেমন: পুকুরে ঢিল ছুঁড়লে এর পৃষ্ঠে আন্দোলন বা হিল্লোল তৈরি হয়। সেই আন্দোলন তরঙ্গাকারে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই না পানির উপর দিয়ে কোনো কিছু টেনে নিয়ে গেলেও সেটি তরঙ্গ তৈরি করতে করতে যায়। যেমন: একটি নৌকা যদি পানির উপর দিয়ে চলমান থাকে তাহলে দেখতে পাব সেটি পানিতে তরঙ্গ তৈরি করছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে। নিচের চিত্রটি দেখুন:
নৌকার চলনে পানির পৃষ্ঠে উৎপন্ন হিল্লোল।
এখন একটি বস্তু যখন স্থানকালের কাপড়ের মধ্যে বিশেষ ভাবে ত্বরিত থাকে তখন তার প্রভাবেও সেই স্থান-কালে সংকোচন-প্রসারণ তৈরি হতে পারে যা তৈরি করবে স্থান-কালের হিল্লোল বা ripple। তবে ঠিক সব বস্তু থেকে এই ধরনের হিল্লোল তৈরি হবে না। এই কাজের জন্য কোন এলাকার ভর বিন্যাসের কোয়াড্রুপল মোমেন্ট পরিবর্তন করতে হবে। এই কাঠখোট্টা টার্ম মনে রাখার বা বোঝার প্রয়োজন নেই্। আপাততঃ একটি অসমভাবে বিন্যাস্ত ভরের চিন্তা করুন। একটি সুষম গোলক বা সিলিন্ডারের ভর সুষম। কিন্তু যদি কোন এলাকায় ভর এভাবে সুযমভাবে বিন্যাস্ত না থাকে বরং এক পাশে কম একপাশে বেশী থাকে অর্থাৎ প্রতিসম না হয় তাহলে এধরনের হিল্লোল তৈরি হতে পারে (কাপড়ের ক্ষেত্রেও চিন্তা করে দেখুন না একটি অতি মসৃণ গোলক কাপড়ে সহজে ঢেউ বা ভাঁজ তৈরি করতে পারবে না।) কিন্তু যদি দুটি ভিন্ন ভরের বস্তু একে অপরের চারপাশে ঘুরতে থাকে বা যদি কোথাও ক্যাওটিক (chaotic) বিস্ফোরণ ঘটে তাহলে এই ধরনের মোমেন্টে পার্থক্য তৈরি হবে এবং স্থান-কালের হিল্লোল তৈরি হবে। আমাদের সূর্য আর পৃথিবী মিলেও এভাবে তরঙ্গ তৈরি করতে পারে, কিন্তু এই যুগলের উৎপন্ন তরঙ্গ এতোই দুর্বল হবে যা সনাক্তকরণ অচিন্ত্যনীয়।
এই যে তরঙ্গ তৈরি হলো এর গতি কেমন হবে? পানির ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই এই তরঙ্গ খুব ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয়। তরঙ্গের গতি নির্ভর করে পৃষ্ঠ কতটা নমনীয় তার উপর। কাপড় যদি নমনীয় হয় তাহলে গতি ধীর হবে যাবে আর যদি দৃঢ় হতে থাকে তাহলে গতি ক্রমশঃ বাড়তে থাকবে। স্থান-কালের নমনীয়তা কেমন? যতটা হলে এর মধ্য দিয়ে গমনকারী তরঙ্গের গতি হয় আলোর গতির সমান! ঠিকই ধরেছেন। স্থান কালের মধ্য দিয়ে এই হিল্লোল তথা G-wave আলোর গতিতেই এগিয়ে যাবে। আলোর গতি কেন? বা অন্য ভাবে বললে কেন আলোই বা স্থানকালের মধ্য দিয়ে এই গতিতে চলে? আসলে স্থুলভাবে উত্তরটি দিয়েই দিয়েছি। স্থান কালের নমনীয়তা এর মধ্য দিয়ে কোন বস্তুর গমনের সর্বোচ্চ এই গতি নির্ধারণ করে দেয়। এটা আসলে বস্তুর গতি নয়, এটি হলো ঘটনার গতি বা কার্যকারণের (causality) গতি, এটি স্থান-কালের মধ্য দিয়ে কোনো কিছুর ফল প্রযুক্ত হওয়ার সর্বোচ্চ গতি। এই গতিতে স্থানকাল পরস্পরের সাথে কথা বলতে পারে বা যোগাযোগ রাখতে পারে। আর স্থান-কালের মধ্য দিয়ে কোনো কিছুর গতিকে চেপে ধরে ভর। এটি হচ্ছে অনেকটা ভীড়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়ার মতো। ভরকে তুলনা করতে পারি জনপ্রিয়তার সাথে। আপনি যদি ভীড়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে যান তাহলে আপনি জনপ্রিয় হলে আপনার চারপাশে লোকজনের ভিড় পড়ে যাবে আর আপনার গতি বাধাপ্রাপ্ত হবে। যতবেশী জনপ্রিয় হবেন ততোই ভিড় বেশী হবে আর আপনার চলাচলেও বাধা পড়বে বেশী। কিন্তু আপনি অজনপ্রিয় হলে বা আপনার অস্তিত্ব সম্বন্ধে দুনিয়াদারী ওয়াকিবহাল না হলে ভীড় বাঁচিয়ে আপনার স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে চলে যেতে পারবেন। আলোর গতিই হচ্ছে শূন্য নিশ্চল ভর বিশিষ্ট যেকোনো কণিকা বা তরঙ্গের এই স্বাভাবিক তথা সর্বোচ্চ গতি যা সে স্থান-কালের মধ্য দিয়ে অর্জন করতে পারে। এই কারণেই আলোর চেয়ে বেশী গতিতে কোনো কিছু/ঘটনা/কার্যকারণ চলতে পারে না। মহাকর্ষীয় এই হিল্লোলের বা তরঙ্গও তাই আলোর গতিতেই তরঙ্গায়িত হবে।
(প্রচুর ছবি ও এনিমেশন যুক্ত হওয়ায় এবং লেখাটি বেশ বড় হওয়ায় দুই খন্ডে ভাগ করে প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হলো।)
·   0

বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬

সময়ের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ

জানার পরিমাণ সসীম, আর অসীম অজানা; বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আমরা দাড়িয়ে আছি ব্যাখ্যার অতীত অবস্থার এক অসীম মহাসমুদ্রের মধ্যে, এক ক্ষুদ্র দ্বীপের উপর। প্রত্যেক প্রজন্মে আমাদের কাজ হলো আরও কিছুটা ভূমি পুনর্দখল করা। – থমাস হাক্সলি
প্রাচীন কালের মানুষেরা রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেত। এই যে পৃথিবী, গ্রহ-নক্ষত্র, আকাশ ভরা বিস্ময়, এর শুরু হয়েছিলো কখন ? আসলেই কি এর কোন শুরু আছে, নাকি চিরন্তন এই মহাবিশ্ব ? আদিকাল থেকে মানুষ এই মহাবিশ্বকে চিরন্তন ভেবে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই তারা ভাবত, এই মহাবিশ্ব বুঝি চিরকালই ছিল। আর তার কোন এক পর্যায়ে মানুষের মত প্রাণীরা এই পৃথিবীর বুকে বাস করা শুরু করেছে। প্রাচীন দার্শনিকরাও এই মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা করেছেন। অ্যারিস্টটল(খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৪ – খ্রিষ্টপূর্ব ৩২২) তার “Meteorology” -এর ১২ তম অধ্যায়ে যুক্তি দেখিয়েছেন- সময়ের কখনো থেমে থাকে না, আর এই মহাবিশ্বও চিরন্তন। অর্থাৎ তিনি ভাবতেন, সময়ের কোন শুরু বা শেষ নেই। যখন কিছু ছিল না তখনও সময় ছিল; আর এই বিশ্বজগতের পরিণতি যাই হোক না কেন, সময়ের মত সময় বয়েই চলবে। অ্যারিস্টটল ছিলেন তার সময়ের সবথেকে প্রভাবশালী দার্শনিক। তিনি এমনই প্রভাবশালী দার্শনিক ছিলেন যে, তার মৃত্যুর প্রায় ২০০০ বছর পর পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার মতই মানুষ মেনে নিয়েছিল। অ্যারিস্টটল ছাড়া তার সমসাময়িক এপিকুরাসও (খ্রিস্টপূর্ব ৩৪১ – খ্রিস্টপূর্ব ২৭০) একই রকম মতামত দিয়েছেন। এসব দার্শনিকদের মতে স্থান এবং সময় দুটোই ছিল পরম।
·   0

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬

রিকার্সিভ প্রোগ্রাম ও রিকার্সিভ অ্যালগরিদম

একটা সেমিনার শুরু হতে যাচ্ছে। তুমি বসে আছো দর্শক সারিতে। পুরো হলে তিল ঠাই আর নাহিরে অবস্থা। কিন্তু তখনো বক্তৃতা শুরু হয় নি। হঠাৎ কৌতূহল হলো তোমার সিটটা প্রথম থেকে কত নাম্বার সারিতে সেটা জানতে। কিন্তু বসে বসে এতগুলো সারি গোনা খুবই বোরিং। তাহলে উপায়? খুবই সহজ, স্রেফ তোমার সামনের সারির একজনকে জিজ্ঞেস করো সে কত নাম্বার সারিতে বসে আছে। যদি সে বলে n তাহলে তোমার নিজের সারি হবে (n+1)। তাহলে কি তোমার অনুরোধে সামনের ব্যক্তি বসে বসে আগের সারিগুলো গুণবে? নাহ! সেও স্রেফ তার সামনের জনকে জিজ্ঞেস করবে, কত নাম্বার সারিতে আছে। এবং উত্তরটা পেয়ে তার সাথে ১ যোগ করে তোমাকে জানাবে। এভাবে প্রশ্ন এগোতে এগোতে একেবারে প্রথম সারিতে বসা কারো কাছে পৌছাবে। সেই প্রথম সারির দর্শকের সামনে আর কেউ নেই। তাই সে আর কোনো গোণার ঝামেলা না করে পিছনের জনকে উত্তর দেবে, “আমি আছি ১ নাম্বার সারিতে”। তার পিছনের জন সেই উত্তরের সাথে ১ যোগ করে জানিয়ে দেবে তারও পিছনের জনকে। এভাবে উত্তরগুলো ১ যোগ হতে হতে এসে পৌছাবে তোমার কাছে। এবং তুমি জেনে যাবে তোমার নিজের সারি নাম্বার।
·   0

বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫

Tour 2015

Tour Collage



at Cox's Bazar

Selfie with Plane 

at Cox's Bazar

at Cox's Bazar

at Saint Martain

at Cox's Bazar

at Himchori

at Moheskhali

at Cox's Bazar

at Cox's Bazar

at Cox's Bazar

at Nilgiri



at Sitakund

at Sitakund

at Rangamati

at Rangamati

at Rangamati

at Kaptai Lake

at Kaptai Lake

at Cimbuk Hill

with Mummy

at Kaptai Lake

at Kaptai Lake

at Kaptai Lake

at Bandarban

at Bandarban

at Nilgiri

at Nilgiri

at Nilgiri Helipad

at Nilgiri

·   0

সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫

নাস্তিকের বাইবেল - THE ATHEIST’S BIBLE

ভূমিকা

“পৃথিবী জানলে বিষ্মিত হবে যে,মানবজাতির উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলোর অধিকাংশই ধর্মের প্রতি অনাস্থা পোষণ করে।”- বলছিলেন জন স্টুয়ার্ট মিল।

এটা সত্যিই বিষ্ময়কর, প্লেটো থেকে শুরু করে আইনস্টাইন, ইবনে সিনা থেকে মহাত্মা গান্ধী, এ পর্যন্ত জন্ম নেয়া দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ দের অধিকাংশই ঈশ্বরের প্রতি বা প্রচলিত ধর্মের প্রতি না-আস্থা পোষণকারী। এবং এটাও বিষ্ময়কর যে তৃতীয় বিশ্ব বা অনুন্নত বিশ্ব, যেখানে মানুষ শিক্ষা-দীক্ষা বা অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে আছে সেখানেই আস্তিকের হার বেশি। বর্তমান হিসেব মতে, পৃথিবীতে ৩৩ভাগ খ্রীস্টান, ১৯ ভাগ মুসলমান, এবং ১৬ ভাগ নাস্তিক, এবং বলাবাহুল্য- এটাও সত্য যে খ্রীস্টানদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নামে মাত্র খ্রিস্টান,আছে নামে মাত্র মুসলিম, হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারী, এই হিসেবে নাস্তিকের হার দাঁড়ায় সবচেয়ে বেশী। এই গ্রন্থটি নাস্তিকদের বাইবেল নামে পরিচিত এবং সমাদ্রিত। এতে সংকলিত একক কোনো ঈশ্বরের বানী নয় বরং শুরুতেই উল্লেখিত মানবজাতির কিছু নখত্রপুঞ্জের স্রষ্টা,সৃষ্টি ও ধর্ম নিয়ে ভাবনা।
·   0

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫

নক্ষত্রের বর্জ্যেই প্রাণের পত্তন

হাজার বছর ধরে মানুষ রাতের ঝলমলে আকাশ দেখে বিস্মিত হয়েছে আর মুগ্ধ নয়নে ভেবেছে বহুদুরের ঝুলন্ত আলোক বিন্দু নিয়ে। আকাশের বুকে জ্বলজ্বলে এই ঝুলন্ত বিন্দুই হলো তারা বা নক্ষত্র। তখনকার দিনে নক্ষত্র মানুষের মনে ঐশ্বরিক চিন্তার যোগান দিত, এমনকি নক্ষত্রদের মাধ্যমে নাবিকরা সমুদ্রে দিক ঠিক করতো। যদিও নক্ষত্র কি, কিভাবে এদের উৎপত্তি – এসব সম্পর্কে তাদের কোন ধারনা ছিলনা। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে আজ নক্ষত্রদের সম্পর্কে জানার তেমন কিছু বাকি নাই। মজার বিষয় হলো, নক্ষত্ররা নিষ্প্রাণ হলেও অনেকটা জীবিত; এদের জন্ম হয় এবং জীবন শেষে মৃত্যুবরন করে।
·   0

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৫

উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড এবং ইনস্টলেশন শেষে এবার সারা জীবনের জন্য একটিভেট করে নিন। সচিত্র বর্ণনাসহ A-Z সাথে ISO ডাউনলোড লিংক তো আছেই!!

উইন্ডোজ ১০ রিলিজ হওয়ার পরেই ডাউনলোড এর ধুম পড়ে গেছে। অনেকেই এর মাঝে ডাউনলোড এবং ইনস্টল করে বসে আছে। কিন্তু বাংলার মানুষ যতো আগেই ডাউনলোড এবং ইনস্টল করুক না কেন এখনো কিন্তু তারা সেই ট্রায়াল ভার্সনেই পড়ে আছে। উইন্ডোজ চালু হওয়ার পরে একটিভেশন উইন্ডো আসলেও অনেকের পিলে চমকে যায়! যাহোক, সমস্যা যেখানে আছে সমাধান সেখানে থাকবেই। আজকে উইন্ডোজ ১০ একটিভেশনের দুটি পদ্ধতি দেখানো হবে। যার কাছে যেটা সহজ মনে হবে সে সেটা করবে।
·   0